সূরা মূলকের ফজিলত সম্পর্কে জেনে আমল করুন


সূরা আল-মুলক (আরবি ভাষায়: الملك) 


মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআনের ৬৭ তম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৩০ এবং রূকুর সংখ্যা ২। সূরা আল-মুলক মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

সূরা মূলক-এর ফজিলত :

হযরত উসমান (রাঃ) যখন কবরের ধার দিয়া যাইতেন তখন কান্নায় উনার দাড়ি ও বুক ভাসিয়া যাইত। লোকে জিজ্ঞাসা করিত ,আপনি জান্নাত ও জা*হা*ন্না*মের বর্ণনাও এত বেশী কান্নাকাটি করেন না, এর কারণ কি ?

তিনি বলেন, আমি হুজুর (সাঃ) এর নিকট শুনিয়াছি কবর আখেরাতের প্রথম মন্জিল। 

যে  ব্যক্তি এখানে নাজাত পাইল, তাহার জন্য সমস্ত মন্জিল আছান বা সহজ । আরো শুনিয়াছি কবর হইতে ভয়ংকর দৃশ্য আমি আর কোথাও দেখি নাই। যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মূলকের আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে।

(তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম)।

★হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন;

কোরআন শরীফে ৩০ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে, যা তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে না দেয়া পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। সূরাটি হলো-- তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মূলক অর্থাৎ সূরা মূলক…।

(আবু দাউদ-১৪০২, তিরমিজি-২৮৯১, ইবনে মাজাহ-৩৭৮৬, মুসনাদে আহমদ-২/২৯৯)।

অন্য এক হাদিসে ;

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন," আমার মন চায় প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ে যেনো সূরা মূলক মুখস্ত থাকে। "

[বায়হাকীর শুআবুল ইমান-২৫০৭]।

আরেকটি এক হাদিসে বর্ণিত আছে,

★যে এ সূরা তেলাওয়াতকারীর আমলনামায় অন্য সূরার তুলনায় ৭০ টি নেকী বেশি লিখা হবে এবং ৭০টি গোনাহ মুছে ফেলা হবে।

(তিরমিজি-২৮৯২)।

আর যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মূলকের আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে।

(তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম)।

হাদীসে আছে; 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো রাতে সুরা মূলক না পড়ে ঘুমাতেন না।

(তিরমিজি-২৮৯২, হিসনে হাসিন)।


সুরা মুলকের ফজিলত*

আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

“নিশ্চয় পবিত্র কুরআনে একটি সূরা, যাতে আছে তিরিশটি আয়াত। উহা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে, যে পর্যন্ত তাকে ক্ষমা না করা হয়। সূরাটি হচ্ছে “তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুল্কু..”। 

(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান এবং হাকেম। হাদীছের বাক্য তিরমিযীর, তিনি হাদীছটিকে হাসান বলেছেন।

(আর হাকেম বলেছেন, এর সনদ সহীহ)

আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

“কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিকে দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে সূরা ‘মুলক’ পাঠ করত। তখন তার সীনা অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে। তখন সীনা অথবা পেট বলবে, আমার দিকে দিয়ে আসার কোন রাস্তা তোমাদের জন্য নেই। কেননা সে আমার মধ্যে সূরা ‘মুলক’ ভালভাবে ধারণ করে রেখেছিল। অতঃপর তার মাথার দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করবে। মাথা বলবে এ দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই।

কেননা সে আমার দ্বারা সূরা ‘মুলক’ পাঠ করেছিল। সূরা মুলক হচ্ছে বাধাদানকারী। কবরের আ*যা*ব থেকে বাধা দিবে। তাওরাতেও সূরা ‘মুলক’ ছিল। যে ব্যক্তি উহা রাত্রে পাঠ করে, সে অধিক ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট আমল করবে।” 

(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন হাকেম,

তিনি বলেন, এর সনদ সহীহ।

নাসাঈতে হাদীছটি সংক্ষিপ্তভাবে এসেছেঃ

“যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুলকু.. পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাকে কবরের আ*যা*ব থেকে রক্ষা করবেন।”


ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে সূরাটিকে মানেআ’ বা বাধাদানকারী সূরা বলে আখ্যা দিতাম। উহা আল্লাহ তা’আলার কিতাব কুরআনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে উহা পাঠ করবে সে অধিক ও উৎকৃষ্ট আমল করবে।

শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি হাসান। দ্র: সহীহ তারগীব ও তারহীব, হা/ ১৪৭৫ ও ১৪৭৬।

*সন্ধ্যার পর ঘুমানোর পূর্বে যে কোন সময় সূরাটি পড়তে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।*


Post a Comment

أحدث أقدم
icon যে কোন প্রয়োজনে টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেসেজ দিন