অপরদিকে, অসৎ হলে বা খারাপ কাজের সাথে জড়িত থাকলে বা নেক কাজ না করে থাকলে, এর ফলে কবরের জীবন হবে বিভীষিকাময়, আর হাশরের মাঠের অবস্থানও হবে ভয়াবহ!!
আর কতটা ভয়াবহ তা মানুষের কল্পনার বাহিরে!
আল্লাহ ﷻ বলেছেনঃ
আর কিসে তোমাকে জানাবে বিচার দিবস কী?" (সূরা আল-মুরসালাত, ১৪)
কিসে তোমাকে জানাবে জাহান্নামের আগুন কী?: (সূরা আল-মুদ্দাসিসর, ২৭)
️হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর এবং সেই দিনকে ভয় কর যেদিন পিতা তার সন্তানের কোন উপকার করতে পারবে না এবং সন্তানও তার পিতার কোন উপকারে আসবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং দুনিয়ার জীবন যেন কিছুতেই তোমাদের কে ধোঁকা দিতে না পারে এবং মহাপ্রতারক (শয়তান) যেন তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে ধোঁকায় ফেলতে না পারে।
-----(সূরা লুকমান, ৩৩)
● আল্লাহর রাসূল ﷺ সর্বদাই কবরের আযাব থেকে রক্ষার জন্য দু'আ করেছেন এবং মুসলিম উম্মাহকেও কবরের আযাব থেকে হিফাযতের জন্য দু'আ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
-------"তোমরা কেউ যখন (সালাতে) তাশাহহুদ পড়, তখন চারটি জিনিস থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রার্থনা করবে। এ বলে দু'আ করবেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
▪উচ্চারণঃ “আল্লহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন আযা-বি জাহান্নাম ওয়ামিন আযা-বিল কবরি ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়া- ওয়াল মামা-তি ওয়ামিন শাররি ফিতনাতিল মাসীহিদ দা জ্জা-ল”
দ্রঃ সবসময় আরবি দেখে সঠিক ভাবে দু'আ পড়া উত্তম!
●আর-কুরানে মহান আল্লাহ তা'আলাঈরশা
হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জাহান্নাম ও কবরের আযাব থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনাহ থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফিতনার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
-----সহীহ্ মুসলিমঃ ১২১১)
মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন(আ-মীন)।।
০২]] জেনে নিন কেমন হবে পবিত্র বিচার দিবস!!
সুবহানাল্লাহী ওয়া'বিহামদিহী-সুবহানাল্লাহীল আযীম!!
মহান আল্লাহ্ তা'আলা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণীর আলোকে পবিত্র বিচার দিবসের অবস্থা যেমন হবেঃ
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
০১। সেদিন সকলে একত্রিত হবে।
-----[সূরা আনআম-২২]
● রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
০২। দুনিয়ার জমিন হবে রুটির ন্যায়।
-----[মিশকাত-৫২৯৮]
০৩। মানুষ নগ্নপদ, নগ্নদেহ ও খতনাবিহীন
সমবেত হবে।
-----[বুখারি,মুসলিম]
০৪। কেউ কারোর প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার অবকাশ
পাবে না।
-----[মিশকাত-৫৩০২]
০৫। কাফেরদেরকে মুখের মাধ্যমে হাঁটিয়ে
একত্রিত করা হবে।
-----[মিশকাত-ক৫৩০৩]
০৬। প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন লোক জাহান্নামী বলে ঘোষিত হবে।
-----[বুখারি-৪৭৪১]
০৭। ঐদিন মানুষ ঘর্মাক্ত হবে, এমনকি ঘাম তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছাবে।
-----[বুখারি]
০৮। সূর্যকে অতি নিকটে আনা হবে এবং
মানুষের আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে ডুবে থাকবে।
-----[বুখারি,মুসলিম]
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ
০৯। দুনিয়াতে যারা আল্লাহর জন্য সিজদাহ
করে নাই কিংবা লোক দেখানোর জন্য সিজদাহ
করেছে, তারা সেদিন আল্লাহকে সিজদাহ দিতে
পারবে না।
-----[সূরা কালাম-৪২_৪৩]
●রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ
১০। মুমিনদের হিসাব হবে মুখো-মুখি।
-----[মিশকাত]
১১। যার হিসাব পুংখানুপুংখ যাচাই করা হবে,সে ধ্বংস হবে।
-----[মিশকাত-৫৩১৫]
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনঃ
১২। ঐদিন মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
-----[সূরা ইয়াসিন-৬৫]
১৩। হাত, পা, কান, চক্ষু এবং চামড়া মানুষের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। ----[সূরা নুর-২৪]
●রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ
১৪। সে দিনের সময়সীমা হ'ল ৫০ হাজার
বছরের সমান।
-----[মুসলিম মিশকাত-১৭৭৩]
১৫। তবে ঐ দিন মুমিনের জন্য একটি ফরজ
সালাত আদায়ের সময়ের ন্যায় মনে হবে।
-----[বায়হাকী মিশকাত-৫৫৬৩]
০৩]] জান্নাতবাসীদের জন্য জান্নাতী একজন ঘোষকের ঘোষণাঃ
আবু সা’ঈদ খুদরী(রাঃ) এবং আবু হুরাইরাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নাবী (ﷺ) বলেনঃ
-------"একজন ঘোষক(জান্নাতের মধ্যে) ঘোষণা দিবেনঃ
▪এখন হতে তোমরা জীবিত থাকবে, আর কখনো মরবে না।
▪তোমরা সুস্থ থাকবে, কখনো অসুস্থ হবে না।
▪তোমরা যুবক থাকবে, কখনো বৃদ্ধ হবে না।
▪তোমরা অফুরন্ত ভোগবিলাসের ভিতর থাকবে, অভাব-অনটন কখনো তোমাদের স্পর্শ করবে না।❞
এটাই আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত বাণীর তাৎপর্যঃ
-------❝তোমরা পার্থিব জীবনে যেসব কাজ করেছ তার বিনিময়ে এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হলে।❞
-----(সূরা যুখরুফঃ ৭২)
-----[সহীহঃ মুসলিম (৮/১৪৮), জামে' আত-তিরমিজি- ৩২৪৬]
ইয়াআল্লাহ তা'আলা! আমাদের সবাইকে সঠিক এবং পরিপূর্ণ ভাবে জানার, বোঝার এবং মেনে চলার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের সবাইকে ক্ষমা, কবুল ও হিফাযত করুন এবং জাহান্নাম থেকে হিফাযত করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন (আ-মীন)।
إرسال تعليق