বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা নিয়মিত হেডফোন ব্যবহার করেন তাদের মস্তিষ্কের সমস্যাসহ কঠিন রুগ দেখা দিতে, যেমন টিনিটাস এমনকি শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। টিনিটাস কি? টিনিটাস একটি গুরুতর রোগ যা কানের ভিতরে শু শু আওয়াজ অনুভব হয়, এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কানে সব সময় এমন মনে হবে, যদিও অন্যরা এই শব্দটি বুঝতে পারে না, তবে এই ধরনের শব্দ আক্রান্ত ব্যক্তির কানে বাজতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হেডফোন কানের ভেতরের ক্ষুদ্র চুলের কোষের ক্ষতি করে। এ কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি সারাদিন রিং-এর শব্দ শুনতে পান। এই রোগের জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন। তা না হলে সমস্যা বাড়ে এবং রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শ্রবণ ক্ষমতার হ্রাস
অনেকের হেডফোনে জোরে গান শোনার অভ্যাস আছে। দীর্ঘদিনের এই অভ্যাস শ্রবণশক্তি কমিয়ে দেয়। এই সমস্যাকে বলা হয় নয়েজ ইনডিউসড শ্রবণশক্তি হ্রাস। মূলত হেডফোন ব্যবহারের কারণেই এই সমস্যা হয়।
সংক্রমণ ফাঁদ
হেডফোন ব্যবহার করলে কানের সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। হেডফোন ব্যবহার করার সময় কান পুরোপুরি বন্ধ থাকে। এছাড়া নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে হেডফোনে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করলে কানে সংক্রমণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে কানে ব্যথা, পুঁজ ও রক্তের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
কানের মোম বের হতে পারে না
কানে জমে থাকা সমস্ত ময়লা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেই বেরিয়ে আসে। কিন্তু সারাদিন কানে হেডফোন রাখলে ময়লা বের হতে পারে না। ফলে কানের ভিতরে মোম বা খোসা জমে। এতে কানের সংক্রমণও হতে পারে।
মস্তিষ্কের ক্ষতি
দীর্ঘক্ষণ হেডফোন ব্যবহারের ফলে কানের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম স্নায়ুর ক্ষতি হয়। এটি পরবর্তীতে ডিজেনারেটিভ রোগ হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। তখন স্মৃতিশক্তি কমতে শুরু করে।
হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহারের সময় সে অডিও সরাসরি আপনার কানে প্রবেশ করে। ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি মাত্রার শব্দ যদি আপনার কানে গেলে ঘটতে পারে শ্রবণ জটিলতা। এমনকি এজন্য আপনি আপনার শ্রবণ ক্ষমতা হারাতেও পারেন চিরতরে। বিশেষজ্ঞদের মতে ১০০ ডেসিবলের উপরে হেডফোন ব্যাবহার করলে মাত্র ১৫ মিনিটে নষ্ট হতে পারে শ্রবণশক্তি।
কানে ব্যথা
যারা দিনের বেশিরভাগ সময় হেডফোন ব্যবহার করেন তারা সাধারণত এর সমস্যায় ভুগেন। মাঝে মাঝে কানের ভেতরে ঝিম ধরা আওয়াজ হয়ে থাকে। এটিও কিন্তু কানের মারাত্মক ক্ষতির উপসর্গ।
অসচেতনতায় কানের ইনফেকশন
একটি হেডফোন একজনেরই ব্যবহার করা উচিৎ। কিন্তু আমরা একটি এয়ারফোন একাধিক ব্যক্তি, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করে থাকি। এতে কানে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। কারণ এয়ারফোনের মাধ্যমে কানের মধ্যে থাকা জীবাণু একজন থেকে অন্যজনে বাহিত হয়। তাই এয়ারফোন কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়। করলে অবশ্যই ব্যবহারের পূর্বে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে নেবেন।
Post a Comment