আসসালামু আলাইকু, আশা করি সকলে ভালো আছেন।আজকে আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব কিভাবে ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ব্লু মার্ক ভেরিফাই করবেন সহজ নিয়মে
ব্লু বেজ ভেরিফাই নিয়ম জানার পূর্বে কিছু কথা বলে নেয়, ফেসবুক আইডি ভেরিফাই করার জন্য কোন ধরণের আইডি কার্ড বা ডকুমেন্ট সাবমিট দিলে কাজ হবে? ফেসবুক যে কারো আইডি অথবা পেইজ ভেরিফাইড করে দেয় না। এর জন্য আপনাকে ফেসবুকের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হবে এবং নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিত্ব হতে হবে।
🔰 ফেসবুক যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আইডি বা পেইজ ভেরিফাইড করে সেগুলো হচ্ছে:
🔸পাবলিক ফিগার।
🔹সেলিব্রিটি।
গ্লোবাল ব্র্যান্ড; ফেসবুকের যেসব ক্রাইটেরিয়া গুলো আপনাকে ফলো করতে হবে সেগুলো হচ্ছে
আপনাকে অবশ্যই অথেন্টিক হতে হবে। ইউনিক হতে হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে অবশ্যই ইউনিক কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে। আপনি যদি অন্যান্য কোনো পেইজ থেকে কিংবা প্রোফাইল থেকে অন্যের পোস্ট কপি করে আপনার টাইমলাইনে পাবলিশ করেন তাহলে হবে না।
তবে চেষ্টা করবেন প্রোফাইলে অবশ্যই বিজনেস মূলক স্ট্যাটাস পাবলিশ করার। কারণ ফেসবুক এ রকম জিনিসগুলো কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়।
তাছাড়া কনটেন্টগুলো যদি ইংরেজিতে দিতে পারেন তাহলে আরো ভালো হয়। আপনার ফেসবুক একাউন্ট ব্লু ভেরিফাই হওয়ার আশঙ্কা আরো বেড়ে যায়। আপনার ইংরেজী সম্পর্কে ধারণা না থাকলে আপনি চাইলে গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে আপনার বাংলা লেখাগুলোকে ইংরেজিতে রূপ দিতে পারবেন।তবে না পারলে বাংলাতে কনটেন্ট পাবলিশ করুন আপনার টাইমলাইনে, এতেই কাজ হয়ে যাবে।
প্রতিদিন আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে মানসম্মত তিন-চারটি আর্টিকেল পাবলিশ করুন। এবং প্রোফাইল টা কে বড় হতে কিছুদিন সময় দিন।]
(১) প্রোফাইল বা পেইজ কমপ্লিট হতে হবে।
[এর জন্য প্রথমেই আপনাকে আপনার ফেসবুক একাউন্টটি কে ভালোভাবে কাস্টোমাইজ করে নিতে হবে।যে কোনো ধরনের ইনফরমেশনগুলো ভালোভাবে ফিলাপ করতে হবে। আপনার প্রোফাইলকে পুরো 100% কাস্টমাইজ করতে হবে।]
(২) আপনার প্রোফাইল বা পেইজ সবার কাছে নোটেবল হবে যা প্রমাণ করবে আপনি আসল ব্যক্তি।
(৩) ফলোয়ার
আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে ফলোয়ার কিছুটা বাড়িয়ে নিন, যাতে দেখা যায় প্রোফাইলটি কিছুটা মানসম্মত।
তবে ভুলেও অটো ফলোয়ার এর চিন্তা করবেন না, কারণ এটা আপনার ফেসবুক প্রোফাইল এর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।প্রতিদিন আপনার টাইমলাইনে মানসম্মত পোস্ট করার মাধ্যমে ফলোয়ার এমনিতেই বেড়ে যাবে।
আপনি আপনার প্রমাণ স্বরুপ যেসব ডকুমেন্ট ফেসবুককে সাবমিট করে আপনার আইডি বা পেইজ ভেরিফাইড করবেন সেগুলো হচ্ছে:
১। পাসপোর্ট।
২। ড্রাইভিং লাইসেন্স।
৩। জাতীয় পরিচয় পত্র।
৪। জন্ম নিবন্ধন সনদ।
৫। স্টুডেন্ট আইডি কার্ড।
আর আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে আইডি ভেরিফিকেশন করতে চান সেক্ষেত্রে যেগুলো দরকার তা হচ্ছে:
১। ফোন অথবা ইউটিলিটি বিল সনদ।
২। ট্যাক্স আইডি।
৩। সার্টিফিকেট অফ ফরমেশন।
তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যদি উপরের ক্রাইটেরিয়া গুলো সম্পূর্ণভাবে মেনে চলেন তাহলেই শুধুমাত্র আপনি আপনার আইডি বা পেইজ ভেরিফাইড করতে পারবেন নয়তো না। অথবা যখন এসব ক্রাইটেরিয়া গুলো সম্পূর্ণভাবে পূরণ হবে তখন ফেসবুক থেকেই আপনাকে ই-মেইলের মাধ্যমে আপনার আইডি বা পেইজ ভেরিফাইড করার জন্য বলা হবে।
প্রোফাইল বা পেইজ ভেরিফাই করলে সুবিধা কি?
এতে অনেক সুবিধা রয়েছে, তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো
🔹ভেরিফাই পাওয়ার পর আপনার আইডি তে যতই রিপোর্ট পড়ুক। তাতে আপনার আইডির কোনো ক্ষতি হবে না না।
🔸আইডি কখনো ডিজেবল হবে না।
🔹ফেসবুক অনেক সময় আইডি ফিলটার করে। যে ফিলটারের কবলে পড়ে অনেকের রিয়েল আইডিই ডিজেবল করে দেওয়া হয়। এই জন্য আবেদন করবেন এই ভেরিফিকেশনের জন্য।
তবে আবেদন করলেই যে ভেরিফাই পাবেন, তা কিন্তু তয়। যদি তাই ই হতো, তাহলে আমাদের সকলের ই একটি করে ভেরিফাই আইডি থাকতো। এবং এই ভেরিফাই এর স্পেশালিটি বলে কিছুই থাকতো না।
🔰এবার মূল আলোচনা শুরু করা যাক
#প্রথমে_Identity_Confirmation_করবো।
এর জন্য কম্পিটার ব্যাবহার করবো। আপনি চাইলে মোবাইলের ব্রাউজার Desktop Mode করেও কাজ টা করতে পারেন। আপনি এ্যাপ দিয়ে ট্রাই করবেন না।
১। প্রথমে আপনার ফেইসবুকের Settings এ যান।
২। দেখুন একটা পেইজ পাবেন, সেখানে নিচে Identity Confirmation এর সোজা ডান দিকে View তে ক্লিক করুন।
৩। আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড দিয়ে Continue করুন।
৪। তারপর পর্যায়ক্রমে
Country;
Get Started; Yes, Continue;
Upload your ID এর ডান দিকে সিলেক্ট করে Next করুন।
তবে তার আগে Two Factor Authentication টা অন করে রাখবেন।
৫। আপনি যে আইডি টা দ্বারা আপনার একাউন্ট ভেরিফাই করতে চান সেই আইডি নাম সিলেক্ট করুন এবং Next এ ক্লিক করুন।
৬। এবার আপনার আইডি কার্ডের ছবি তুলুন মোবাইলে।
তবে খেয়াল রাখবেন। ছবি যেনো ক্লিয়ার হয়। সমস্ত লেখা যেন ক্লিয়ার বোঝা যায়। ছবিটা একেবারে সোজাভাবে তুলবেন। এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে একতা কালো কোনো কিছু নিবেন। যাতে ফিন্টারিং করা সহজ হয় যে কোন টুকু আপনার আইডির ছবি। মনে রাখবেন, ছবি কিন্তু কোনো রকমের এডিট করে পরিষ্কার করার বৃথা চেষ্টা করবেন না।
এবং দুই সাইডের ছবি তুলে তা একটা ছবিতে রুপান্তর করবেন।
৭। এবার ফেসবুকের পেইজে যান। এবং Upload your ID জায়গাতে ক্লিক করে আপনার আইডি আপলোড করুন, Next এ ক্লিক করুন।
৮। Submitting হয়ে গেলে Finish এ ক্লিক করুন।
সাবমিট হয়ে গেলো আপনার আইডেন্টিটি।
* View তে ক্লিক করে দেখতে পারবেন যে আইডেন্টি ভেরিফাই হয়েছে কিনা।
* Review তে আছে।
* আইডেন্টি ভেরিফাই হওয়ার জন্য ০৩ দিন থেকে ০১ সপ্তাহের মতো অপেক্ষা করুন।
টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য আরো বেশি দিন সময় লাগতে পারে।
যেভাবে প্রোফাইল ব্লু বেজ ভেরিফাই (Blue Budge Verification) এর জন্য আবেদন করবেন।
নিচের তথ্যগুলো অনুসরণ করে আবেদন করুন
১। এই লিংকে ক্লিক করে আবেদন পেইজে প্রবেশ করুন।
[অথবা,
প্রথমে আপনার ফেসবুকে লগ ইন করার পর > Help Center এ প্রবেশ করুন
> সার্চ করুন Facebook badge verification, সার্চ করার পর > How do I request a blue verification badge? > লেখা আসলে সেখানে ক্লিক করুন, > তারপর আর একটা পেইজ আসবে তখন নিচ দিকে যান this form এ ক্লিক করুন।]
২। এবার Chrome ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করুন।
[তবে তার আগে ঐ ব্রাউজারে আপনার ফেসবুক লগ ইন করে রাখবেন।
এবং যদি মোবাইল দিয়ে এসব করে থাকেন তাহলে অবশ্যই লিংক টি তে ঢোকার আগে ব্রাউজার Desktop Mode করে নিবেন।]
৩। লিংকে ক্লিক করার পর একটা পেইজ পাবেন।
উপরের লিংকে ক্লিক করার পর একটি পেইজ দেখতে পারবেন, পেইজটি কিভাবে ফিল-আপ করবেন তার বর্ণনা আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি।
what are you verifying:
আপনি যদি আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ব্লু ভেরিফাই করতে চান তাহলে "Profile" সিলেক্ট করুন আর যদি পেইজ ব্লু ভেরিফাই করতে চান তাহলে "Page" সিলেক্ট করুন।
এরপর নিচের দিকে কতগুলো স্টেপ থাকবে সেগুলো পূরণ করতে হবে:
(1)🔹Confirm authenticity
এখানে একটি সরকারি ডকুমেন্ট দিন। আপনি যদি সরকারের কোনো উচ্চপদস্থ স্থানে কাজ করেন তাহলে এর সার্টিফিকেট দিন।
ডকুমেন্ট (ড্রাইভিং লাইসেন্স/এনআইডি/পাসপোর্ট) সংযুক্ত করুন।
কিংবা আপনি যদি ছাত্র-ছাত্রী হন তাহলে আপনার স্কুলের সার্টিফিকেট সাবমিট করুন!
মোট কথা হলো আপনি যে ফরমেট থাকেন না কেন, আপনার জন্ম তারিখ এবং নাম অনুসারে রিয়াল ডকুমেন্টটি এখানে সাবমিট দিতে হবে।
[মনে রাখবেন, আপনার ফেসবুক প্রোফাইল যেন সঠিক হয়। আপনার আইডি কার্ড এবং আপনার প্রোফাইল এর নাম + জন্ম তারিখ + ঠিকানা সব যেন ১০০% মিল থাকে।]
(2)🔹 confirm notability
আপনার পেশা বা দক্ষতা অনুযায়ী ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন।
(3)🔹 country/region: দেশ নির্বাচন করুন।
(4)🔸 audience (optional): কেন ভেরিফাই করতে চান, কারা আপনাকে ফলো করে, কেন ফলো করে এ বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করবেন।
এখানে আপনি আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু লিখুন। তবে ভুয়া কিছু লেখা থেকে বিরত থাকাটাই শ্রেয়।
আপনি যেই ফরমেটে কাজ করেন না কেন, কিংবা আপনি যদি সেলিব্রেটি হন যে ফরমেটে সেলিব্রেটি তা বর্ণনা করুন। তবে এগুলো English এ লিখবেন।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এমনিতেই আপনার ডকুমেন্ট দেখলে তা উপলব্ধি করতে পারবে তবুও এটা বর্ণনা করা ভালো।
(5)🔹also known as (optional): আপনার নিজের/প্রতিষ্ঠানের যদি ভিন্ন কোনো নাম থাকে (এক/একাধিক) লিখুন। অথবা ভিন্ন ভাষায় একই নাম যেভাবে লিখেন তা লিখুন। প্রয়োজনে নামের বিষয়েও ব্যাখ্যা দিতে পারেন।
এরপরে ৫টি লিংক দিতে হবে। তার মধ্যে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে লেখা ৩-৪টি সংবাদের লিংক দিন। ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তির স্ব নামে প্রকাশিত সংবাদের লিংকও দেওয়া যাবে। এছাড়া ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার ১-২টি লিংক দিতে হবে।
৯. এবার Send বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করুন।
*কিছুক্ষণের মধ্যেই ফেসবুক আপনাকে একটা নোটিফিকেশন পাঠাবে।
সেখানে ফেসবুক আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করেছেন তাই।
এবং সেই সাথে জানিয়েছে যে আপনি আপনার মত করে ফেসবুকে কাজ চালিয়ে যান। তারা এই মুহুর্তে বিষয়টি রিভিউ করতে পারছে না। তবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা বিষয় টি দেখবে। এবং ৩০ দিনের ভিতরে আপনি ভেরিফিকেশন না পেলে আবার এপ্লাই করতে পারবেন। তবে এখানে একটি কথা স্পষ্ট করা যাক! আর সেটা হলো অনেকেই চায় যে ব্লু ভেরিফাই ফেসবুক একাউন্ট ক্রয় করার জন্য।
এটা আসলে অবৈধ একটি কাজ কিংবা আপনি চাইলে এটা কখনোই করতে পারবেন না, আপনি যদি অবৈধ উপায়ে ফেসবুক একাউন্টে ব্লু ভেরিফাই করে নেন যদিও এটা সম্ভব নয়। তাহলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ যখন নজরদারিতে আপনার ফেসবুক একাউন্ট কর্তৃপক্ষ তখন তারা আপনার ব্লু বেজ ভেরিফাই রিমুভ করে দিবে। যদিও এটা কোনো ক্ষেত্রে কাম্য নয়। তাই চেষ্টা করুন লিগাল উপায় ফেসবুক একাউন্ট ব্লু ভেরিফাই করার।
তবে খেয়াল রাখবেন আপনার নোটিফিকেশনে। ফেসবুক আপনাকে এই বিষয়ে কখনো কিছু জানাতে বা চাইতে পারে।
এবং ভেরিফাই হয়ে গেলেও আপনি আপনার নোটিফিকেশনে তার খবর তো পাবেনই,
আমি আবারো বলছি। আপনি ভেরিফাই বাটন পাবেন কিনা তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তবে এপ্লাই করতে তো আর দোষের কিছু নেই।
ফেসবুক আইডেন্টিটি ভেরিফাই এবং ব্লু বেজ ভেরিফাই এক কথা নয়। তবে ব্লু বেজ ভেরিফাই করতে প্রথমে আইডেন্টিটি ভেরিফাই করতে হবে।
ধন্যবাদ।
ফুট নোটগুলি
[1] প্রোফাইল বা পেইজ কমপ্লিট হতে হবে।
[2] আপনার প্রোফাইল বা পেইজ সবার কাছে নোটেবল হবে যা প্রমাণ করবে আপনি আসল ব্যক্তি।
[3] ৫ হাজার ফলোয়ার
আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করুন, আল্লাহ হাফেজ
Post a Comment