সারা জাগানো ইসলামিক উপন্যাস “বিষন্নতা” (পর্ব-০২)

অবশেষে রেহানা কিছু বললো...

-আসসালামু আলাইকুম(এতো কিছুর মাঝে রেহানা ভুলেই গিয়েছিল সালাম দেওয়ার কথা,,নিজের উপর ই দিক্কার হচ্ছিলো রেহানার,অবশেষে কাপা কাপা কন্ঠে সালাম দিল)

গত পর্ব যারা পড়েন নাই এখনি পড়ে নিন. প্রথম পর্ব 🔸/link/button

এবং বললো..জি,আমার নাম রেহানা..

এবার ছেলে পক্ষের বয়স্ক লোকটি কথা বললো,,না জানি কোন কারনে এতক্ষণ চুপ ছিলো..

তিনি সালামের জবাব দিলেন..

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু.. 

শাওন প্রথম রেহানার কন্ঠ শুনতে পেলো.. কাপা কাপা ভয় পেয়ে বলা কন্ঠস্বর মোটেও মধুর ছিল না,,এবং খুব অল্প স্বরে কথা বলেছে রেহানা,,

তখন বয়স্ক লোকটি জিজ্ঞেস করলো,তুমি নামায পড়ো,,

রেহানা মাথা নাড়ালো,উত্তর হ্যাঁ.. 

কোরআন তেলাওয়াত করো..

রেহানা মাথা নারালো উত্তর হ্যাঁ.. 

ঠিক আছে,তাহলে একটা সুরা তেলাওয়াত করে শুনাও তো..

রেহানা হচকিত হয়ে গেলো..

এতো গুলো পর পুরুষ নন মাহরাম দের সামনে কি করে ও তেলাওয়াত করবে,,কি করবে এখন রেহানা,,

এই দুই বছরে রেহানাকে কোনো নন মাহরাম দেখা তো দুরের কথা কন্ঠ স্বর পর্যন্ত খুব কম নন মাহরাম ই শুনেছে, শুনলেও রেহানা কন্ঠ খারাপ করে কথা বলেছে,,মিষ্টি করে কখনো বলে নি,,এবার কি করবে রেহানা??

রিমি ভাবছে,,আপু তো ছেলেদের সামনে কথাই বলে না,সুরা বলবে কি!!!

রেহানা খুব ই দুশ্চিন্তা আর কষ্টের মধ্যে পড়ে গেলো..তখন পেছন থেকে রহমান সাহেব বললেন,,বলো মা,,তেলাওয়াত করে শুনাও,,

রেহানা ভাবছে ও কি করবে.. সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে.. রেহানা,,প্রতি মুহূর্তে শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করছে,,আর বলছে,,আল্লাহ এতো কঠিন কেনো আল্লাহ সব কিছু এতো কঠিন কেনো,,আমি চেয়েও ইসলাম পালন করতে পারি না,,,আল্লাহ আমাকে সহায়তা করো..

অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করার পরও রেহানা কিছু বলছে না, এবার রহমান সাহেব এর রাগ চরম পর্যায়ে চলে গেছে রহমান সাহেব,, ভাবছে,,কোরআন তেলাওয়াত করতে বলছে,,রেহানা করছে না কেনো,,ওকে তো আর বেপর্দা হতে বলে নি,এতো ধার্মিক,সারাদিন কোরআন নিয়ে পড়ে থাকে,সামান্য সুরা বলতে পারছে না,,

কিন্তু রহমান সাহেব তো জানে না আল্লাহর হুকুম এর ব্যাপারে,,আল্লাহ তায়ালা নন মাহরাম এর সামনে মিষ্টি কন্ঠে কথা বলতে যে নিষেধ করেছে,,

আল্লাহর রহমতে হঠাৎ করে.. শাওন এর বন্ধুর ফোন আসে,,ঘরে নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলো না,,তাই সাজেদা বেগম রিমিকে বললো ছেলেটিকে ছাদে নিয়ে যেতে,,

এই কথা শুনে আরো একজন ছেলের চাচাতো ভাই, ছাদে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলো,,রিমি দুইজন কে নিয়ে ছাদে গেলো..

রেহানা ব্যাপার টা লক্ষ্য করলো,,রিমির সাথে দুজন ছেলেকে এভাবে পাঠাতে দেখে ওর কষ্ট হলো.. তবে রেহানা ওই ব্যাপার টাকে একটু ভুলে গেল,,আর সবার কথাতে জরিয়ে পড়লো,,সবাই সুরা বলার জন্য জোরাজোরি করছে,,

তার রেহানা আল্লাহ কে শুকরিয়া করলো.. যে হে আল্লাহ অন্তত ইয়াং নন মাহরাম গুলো তো চলে গেছে আলহামদুলিল্লাহ... 

তারপর রেহানা কোনো উপায় না পেয়ে সুরা আর রহমান তেলাওয়াত করলো.. বেশি না কয়েক আয়াত পড়তেও সবাই তালি দিলো..

কোথায় সবাই মাহ শা আল্লাহ বলবে,উলটো তালি দিচ্ছি,এমন ভাবে করতালি দিচ্ছে যেনো রেহানা স্টেজে গান গেয়েছে...

রেহানা বলছে,,হ্যাঁ আল্লাহ সবাইকে তুমি হেদায়েত দাও,,

এবার মেয়েকে দেখার পালা,,মুখ এর কাপড় টা একটু খুলো দেখি তোমারে,,এবার রেহানা কি করবে,,বাকি যারা আছে সবাই নন মাহরাম, যদিও বিবাহিত কিন্তু এটা তো হারাম,,কি করবে রেহানা,,

এবার রেহানা কিছুতেই মুখ খুলছে না,,রেহানার চোখ অশ্রু শিক্ত.. একবার পিছন ঘুরে মায়ের দিকে তাকালো,,সাজেদা বেগম এর ও খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কি করবে.. তার তো কিছু করার নাই,,

ছেলে পক্ষ নানান কথা আর বাজে মন্তব্য করতে লাগলো তারা বলতে লাগলো..

দেখুন রহমান সাহেব,,পর্দা করা ভালো কিন্তু মনের পর্দাই আসল পর্দা বুঝলেন,,আপনার মেয়েকে একটু বুঝান,আজকাল বাইরের পরিবেশ দেখেছেন ই তো,,সব ইসলাম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে জংগী হয়ে যাচ্ছে আপনার মেয়ের লক্ষন গুলোর দিকে খেয়াল রাখবেন,,আর অপমান করার ইচ্ছায় যেহেতু ছিল আপনাদের, জানলে কখনো আসতাম না,,আমাদের ছেলে কোনো অংশে কম না,,হাজার হাজার মেয়ে আছে ওর জন্য। 

আর সব চেয়ে বড় কথা এখানে যারা আছে সবাই তো বাবার বয়সি..এটা আবার কেমন পর্দা

এতো কথা সব যেনো,,রেহানা ও রেহানার পরিবারে বিধে বিধে লাগছে.. আজ রেহানা দোষ না করেও দোষী.. 

কেমন লোক তারা কোনো কথাই তাদের মুখে আটকায় না,,

কিন্তু শাওন কিছু বলছে না,ও কিছুক্ষণ পর পর শুধু রেহানার দিকে লক্ষ্য করছে,,

এই দিকে রিমির সাথে শাওন এর বন্ধু উদয় এর সাথে ভালোই ভাব জমেছে,,,অন্য রকমের ভাব,,তিনজনে মিলে ভালোই হাসাহাসি করছে,,রিমি রেহানার সম্পর্কে সকল তথ্য ই দিয়ে দিচ্ছে,,হঠাৎ করে উদয় বলে ওঠে,, আপনার ফেইসবুক আইডি কি,,??

হঠাৎ এ প্রশ্ন যে,, না মানে এতো মিষ্টি একজন মানুষের সাথে পরিচয় হলো,,বাড়িতে যেয়ে তো মিস করবো আর কখনো যদি দেখা না হয়,,

রিমি অনেক সুন্দর একটি মেয়ে,,সামান্য মিষ্টি হাসিতেই খুব সুন্দর লাগে ওকে,,

গালের ওই তিল টা যেনো ওর সৌন্দর্য কে আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি করে দিয়েছে.. কিশোরী বয়স টা খুবই মারাত্মক ফেতনার একটি বয়স। 

রিমি মুছকি হেসে বলে,,রিমিয়াতুল রিমি আমার আইডির নাম,,প্রোফাইল এ আমার ছবি দেওয়া আছে,,

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ.. আজকাল আপনার মতো ফ্রি মনের মানুষ খুব কম ই দেখেছি রিমি,,


তাই??

হুম..

এভাবেই নানান রকমের কথা তিনজন এর মধ্যে চলতে থাকে এই দিকে ছেলে পক্ষের হাজারো কথার মাঝে হঠাৎ পিছন থেকে রহমান সাহেব সাজেদা বেগম কে ইশারা করে,,


সাজেদা বেগম ইশারা বুঝতে পারে.. হঠাৎ করে রেহানা বুঝতে পারে যে তার মা তার নেকাব পেছন থেকে খুলে দিচ্ছেন,,রেহানা কিছু করার আগেই সাজেদা বেগম রেহানার হাত টা চেপে ধরে,,রেহানার চেহারা 5 জন পুরুষের সামনে প্রদর্শিত হয়,,এবার রেহানা কোনো ভাবেই কান্না থামাতে পারবে না,,ও অঝোরে কেদে যাচ্ছে,,শাওন এর চোখ রেহানার চোখের দিকে..


কিন্তু রেহানা কান্না করেছে,গরমে পুরো মুখ ঘেমে গিয়েছে,, এমনিতেও কোনো সাঝগুজ,রেহানা করে নি,,

বোরকা পরিহিত তাই মুখের কোনো সৌন্দর্যই ফুটে ওঠে নি.. রেহানা সুন্দর তবে আজ তাকে সুন্দর লাগছে না,চোখের নিচে কালি জমে আছে,,না যেনো কত রাত সে ঘুমোই নি,,


ছেলের ফুফু মুখ দেখেই চোখ ভাজ করে বিরক্তি প্রকাশ করে.. আজ যদি রেহেনা সাজতো,,চুল খুলে রাখতো ওকে হয়তো বিশ্ব সুন্দরী লাগতো.. কিন্তু রেহানা কখনো এমন টি চাইবে না,,


রেহানার খুব কষ্ট হচ্ছে... শাওন রেহানার চোখ দেখে,,বুঝতে পারছে ওর অনেক কষ্ট.. শাওন ভাবছে,,হয়তো শাওন এর মতো কষ্ট পাচ্ছে রেহানা,,রেহানাও হয়তো শাওন এর মতো বিষন্ন।

হঠাৎ করে শাওন লক্ষ্য করলো,রেহানা,,চোখ বুঝে যাচ্ছে ওর হাত পা কাপছে,, হয়তো অজ্ঞান হয়ে যাবে..

ঠিক সেই মুহুর্তে রেহানা...

রেহানা আর কিছুই অনুভব করতে পারছে না,,হয়তো এখন ই জ্ঞান হারাবে,,,

শাওন কিছুই বুঝতে পারছে না.. কেনো রেহানা কান্না করছে,,কেনো এতো নার্ভাস সে,,তারমানে কি রেহানার বিয়েতে মত নেই,,ও কি অন্য কাওকে ভালোবাসে,,যাকে ভালোবাসে তাকে ছাড়া আর কাউকে সে নিজের সৌন্দর্য দেখাতে চায় না??

ইশ কত লাকি সেই মানুষ টা যে মানুষ টাকে রেহানা হয়তো ভালোবাসে,, এরকম অনেক কিছু ভাবছে শাওন... 

রেহানা,,হঠাৎ করে আল্লাহর নাম নিয়ে নিজেকে শক্ত করে নিলো,,,আর নিজের হাত ছুটিয়ে মুখটা ঢেকে নিলো..

আর মনে মনে বললো...রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান লাভের আবেদন করতে বলেছেন। 

‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ। ’

অর্থ: হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্ব চরাচরে ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

লাইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নি কুনতুমিনাজ্জালিমিন’

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তুমি মহাপবিত্র। নিশ্চয়ই আমি সীমা লঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।


বার বার দোয়া পড়তে লাগলো...

তখন,,ছেলে পক্ষের একজন বললো মাহ শা আল্লাহ,, যেমন সুন্দর কোরআন তেলাওয়াত, তেমনি সুন্দর মেয়ে,,

ফুফু বলছে,,মেয়ে বোধ হয় নিজের যত্ন নেয় না,,


যাই হোক মেয়ে যে এতো গরমে এসব পড়ে আছে,,এখন একটু খুলুক,,মেয়ের চুল দেখি,,আছে নাকি নাই,,

সাজেদা বেগম বললেন,,থাকবে না কেনো,,রেহানার মাথায় ভালোই চুল আছে,,

হ্যাঁ, তাহলে একটু দেখাতে বলেন,,

রেহানাঃআস্তাগফিরুল্লাহ,আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ। 

আল্লাহ তুমি সবাইকে হেদায়েত দান করো,,চুল তো আমার বাবাও দেখে নি আমার হেদায়েত পাওয়ার পর,এমন কি 1 টা চুল ও নয়,

আর আমাকে এখানে চুল দেখাতে বলা হচ্ছে,,

আমি আর সহ্য করতে পারছি না,এতো অন্যায় আর ভুল আমি মেনে নিতে পারবো না,,

সাজেদা বেগম বলছেন,,আপনি না হয় ঘরে যেয়ে চুল দেখে নিয়েন,,আসলে এই দুই বছরে আমি নিজেই ওর চুল দেখিনি,,পর্দা করার পর থেকে ও কখনো বেপর্দা হয় নি তো,,তাই আর কি,,

রহমান সাহেব,,সাজেদা বেগম এর দিকে রাগী চোখে তাকালেন আর বললেন,,যেটা নিয়ম সেটা নিয়ম ই,,আপনারা চাইলে ওর চুল দেখতে পারেন কোনো সমস্যা নেই,,

এই কথা শুনার পর রেহানা কিছুই উপলব্ধি করতে পারছে না,,ওর মাথা ঘুরাচ্ছে,,কি করবে রেহানা এখন.. 

তখন শাওন ভাবছে,,পুরোনো দিনের মতো কিসের চুল দেখার কথা বলছে আমার পরিবার!!!!!!!!!

তারপর নানান ধরনের প্রশ্ন করা হলো রেহানাকে,,কিন্তু সব উত্তর সাজেদা বেগম ই দিলো.. 

এবার নাকি চুল দেখার পালা...

(ভাবতে পারেন আজকাল হেটে দেখানো, চুল দেখানো এসব কেউ করে নাকি,,তাহলে বলবো আপনি অজ্ঞতার শহরে আছেন,ঘটনা গুলো গল্প হলেও বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া,, আমার পরিচিত আপুদের কাছ থেকে নেওয়া,,কোনো কোনো আপুর সাথে এমন ও হয়েছে যে,পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে তার উপর দিয়ে হেটে পায়ের ছাপ দিতে হয়েছে,,আরো কত কি তা না হয় উল্লেখ নাই করলাম,,)

রেহানা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে,,আর সহ্য করবে না সে,,ঠিক এই সময় উপর থেকে 3 জন নেমে এলো,,

তো ছেলের ফুফু জোর করতেই আছে,,ঠিক সেই মুহূর্তে শাওন তার চাচাতো ভাই কে ইশারা করে ব্যাপার টা বুঝালো আর তার ভাই চাচাকে যেয়ে বিষয় টি বললেন,,এবং ছেলার দাদা বললেন,,না থাক চুল দেখার হলে রুমে যেয়ে দেখিস,,,তাছাড়া এখানে আর কোনো মহিলা মানুষ নেই সবাই পুরুষ,, আমরা এসব দেখে কি করবো...

রেহানা সস্তির নিশ্বাস ছাড়লো... ও জানে আল্লাই ওকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছে,,ও আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ যিকির করতে লাগলো(মনে মনে)

কিন্তু একি কয়েকজন বলছে,,ভালো করে পরখ করে নিলেই ভালো হয়,,,,ছেলের ফুফু রেহানার পাশে এসে বসলো,,চুল দেখার জন্য,, আর পা দেখতে চাইছেন, আর বলছেন,,ঠিক আছে আপনাদের দেখতে হবে না আমিই দেখে নিই..

কি সব আজব ব্যাপার স্যাপার,,এখানে চুল বের করলে কি সবাই দেখবে না,??রেহানা কিছুই বুঝতে পারছে না..মহিলা টির জোরাজোরি করা দেখে রেহানা বুঝতে পারলো,,মহিলাটি ইচ্ছে করে ওকে বেপর্দা করানোর চেষ্টা করছে,,হয়তো মহিলাটি রেহানাকে একদম ই সহ্য করতে পারছিল না,,এবার রেহানার ধৈর্যের শেষ প্রান্তে পৌছে গেছে..

 রেহানা সবার সামনে হঠাৎ করেই ফুফুর হাত ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো,, এবং বাবার দিকে চোখ ভরা পানি নিয়ে তাকালো আর ধীর পায়ে কিন্তু দ্রুত উপরে চলে গেলো...

সবাই তো খুব অবাক হয়ে গেলো এবং রেহানাকে অভদ্র মনে করলো,,সবার খুব রাগ হলো..

এদিকে রেহানা খুব ই অসুস্থ বোধ করছে,,মাথাটা ওর প্রচন্ড ঘুরাছে,,খুব কষ্টে সিড়ি বেয়ে নিজের ঘরে গেলো,,কিন্তু সাথে সাথেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললো.. আর মেঝেতে পড়ে গেলো...

রেহানার মাথা টা ভার হয়ে আছে,খুব কষ্টে চোখ খুললো.. রেহানা বুঝতে পারলো ও ওইসব ঘটনার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল,,আর এখন রাত হয়ে গেছে ওর জ্ঞান ফিরেছে, 

ও তাকিয়ে দেখলো বিছানায় শুয়ে আছে,,বোরকা টা খোলা,,ও মনে মনে বলছে,,হয়তো মা এসেছিল,,কারণ আমি তো মেঝে তে পরে ছিলাম,,মা হয়তো বিছানায় শুয়িয়ে দিয়েছে,,

হঠাৎ করে ওর মনে পড়লো,,হায় আল্লাহ কয়টা বাজে,,দ্রুত ঘড়ি দেখলো,,একি 8টা বেজে গেছে,,তারমানে আসর আর মাগরিবের নামায ওর কাযা হয়ে গেছে,,

ওর খুব কান্না পাচ্ছে কারণ লাস্ট বার যখন ওর নামায কাযা হয়েছিল,,ও আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছিলো আর কখনো কাযা করবে না কখনো না,,কিন্তু আজ যে ওর ওয়াদা ভংগ হয়ে গেছে,,দ্রুত ওঠার চেষ্টা করছে রেহানা কিন্তু না পারছে না,,কিছু ক্ষন শুয়ে কান্না কাটি করলো,,সব ব্যাপার গুলো শুধু ওর চোখের সামনে ভাসছে,,

হঠাৎ ওর ভাবনা হলো,রেহানার ওইখান থেকে চলে আসার পর কি হয়েছিল??ছেলে পক্ষ কি করেছিল?? ওর বাবা কেমন করেছিল?? আজ কি ওর এই বাড়িতে শেষ দিন হবে?? বাবা কি ওকে আর কখনো ভালোবাসবে না?? 

ওর স্বপ্ন একটা ঈমানদার এর সাথে বাকী জীবন টা কাটানোর, তাকি কখনো পুরন হবে না??

বাবার কথা অনুযায়ী এই সম্পর্ক টা ঠিক না হলে,,জীবন এর সাথেই ওর বিয়ে দিয়ে দিবে বলেছিলো...

এখন কি ওই দুশ্চরিত্র জীবন নামক ছেলেটির সাথেই ওর বিয়ে হবে?? কি হবে রেহানার??

চলবে ইন শা আল্লাহ ....

 The Author of the story is Afrina Awal Anika

Post a Comment

Previous Post Next Post
icon যে কোন প্রয়োজনে টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেসেজ দিন