২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের তারিখ ঘোষণা।

আগামী জানুয়ারিতে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। 

২০২৪ সালের বিশ্ব ইজতেমা কত তারিখে?

ইজতেমার প্রথম পর্ব ২০২৪ সালের ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব  ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরে  অনুষ্ঠিত হবে। alert-success


প্রথম পর্বের ইজতেমায় মাওলানা জোবায়ের পক্ষের লোকজন ইজতেমায় অংশ নেবেন। তিন দিনের এই পর্বের ইজতেমা শেষ হবে ৪ জানুয়ারি।

চার দিনের বিরতির পর ৯ ফেব্রুয়ারী শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। চলবে ১১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এতে ওয়াসেক পক্ষের লোকজন অংশ নেবেন। এছাড়াও বিশ্বের ৫০/৬০ দেশের মুসলমানরা ইজতেমায় অংশ নিয়ে থাকেন। 

ঢাকা থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর বিশাল ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ভারতের প্রখ্যাত মাওলানা ও তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সাদের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে দুই গ্রুপ দুই পর্বে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন। 

একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা, অপরটির নেতৃত্বে বাংলাদেশের আলেম ওলামাদের মাওলানা যোবায়ের অনুসারী গ্রুপ। 

ইজতেমাতে আসলে কী শিখানো হয়? 

এসব প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ইজতেমার মূল আমল হলো- বয়ান। প্রতিদিন ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর লম্বা সময় নিয়ে বয়ান করা হয়। জোহর এবং আসরের পরেও ছোট্ট পরিসরে বয়ান হয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে বিশেষ শ্রেণী বা পেশার মানুষ যেমন ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবি, সাংবাদিক ও আলেমদের নিয়ে আলাদা আলাদা বয়ান হয়। এ সময় মাঠে থাকা অন্যরা তালিমের কাজে ব্যস্ত থাকেন। বয়ান সাধারণত ভারত-পাকিস্তানের বিজ্ঞ আলেম ও মুরুব্বিরা করে থাকেন। বয়ান উর্দুতেই বেশি হয়। পরে এটা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ হয়। তবে বাংলাদেশের কেউ বয়ান করলে সরাসরি বাংলাতেই করেন। বিদেশি মেহমানদের জন্য এসব বয়ান তাদের নিজ নিজ ভাষায় অনুবাদ করে শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়, এমনকি শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য বয়ানের মর্মার্থ বুঝানোর ব্যবস্থা রয়েছে।

এ সব বয়ানের মূল উদ্দেশ্য থাকে, মানুষের মধ্যে ঈমানি চেতনা বৃদ্ধি এবং দ্বীনের প্রচার-প্রসারের ভাবনা তৈরি করে তাদেরকে জামাতে বের হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা। এক্ষেত্রে শুধু বয়ানের দ্বারা সবাই তৈরি হয়ে যায় না। বরং পুরো ইজতেমার সময় জামাতে লোকজনকে বের করার জন্য আলাদাভাবে তাশকিল করা হয়। 

বস্তুত উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে প্রদেয় বয়ান ইজতেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর ইজতেমার মুনাজাত হলো, দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে রওয়ানাকারী জামাতের সদস্যদের জন্য। আসলে ইজতেমার আখেরি মুনাজাত ইজতেমা শেষ- এ জন্য করা হয় না। বরং ইজতেমা থেকে অনেক জামাত দেশের বিভিন্ন এলাকায় দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে বের হয়। এসব জামাত রওয়ানা হওয়ার সময় তাদের উদ্দেশ্য নির্দেশনামূলক একটি বয়ান হয়। যাকে হেদায়েতি বয়ান বলা হয়। বয়ান শেষে দ্বীনের রাস্তায় বের হওয়া সব জামাতের জন্য, সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য,

 বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য- বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আর এই মুনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হয়। দোয়ার পর জামাতগুলো তাদের গন্তব্য জেনে সে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। হজরত নবী করিম (সা.) কোথাও কোনো জামাত পাঠালে এভাবে তাদেরকে হেদায়েত, নির্দেশনা ও তাদের জন্য আন্তরিক দোয়া দিয়ে বিদায় দিতেন। এ ধারা পরম্পরায় ইজতেমার মাঠে এই বিশেষ দোয়া করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post
icon যে কোন প্রয়োজনে টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেসেজ দিন