উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার মুহুর্তেই বয়ে আনতে পারে চরম পরিণতি। হার্ট ডিজিজ, হার্টফেল, স্ট্রোক, কিডনি অকেজো ইত্যাদি মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপের ফলে।
কেন হাই ব্লাড প্রেসার হয়, হলে করণীয় কি?
রক্ত চাপ যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন উচ্চ রক্তচাপ হয়। মস্তিস্ক মেরুজল হৃৎপিণ্ডের তৃতীয় অংশ থেকে ওপরে উঠে স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করে। যখন মস্তিষ্ক মেরুজলে লবণের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন বহির্গত নালির বাল্বের ভেতরে অবস্থিত চুলের মতো সূক্ষ কোষগুলো শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্ক মেরুজলের প্রবাহ ব্যাহত হয়। হৃৎপিণ্ডের তৃতীয় অংশে এই মস্তিষ্ক মেরুজলকে ওপরে ঠেলার জন্য যে চাপের সৃষ্টি হয় তাই উচ্চ রক্তচাপ।
লক্ষণ গুলো তুলে ধরছি, মাথাব্যথা, বিশেষ করে পেছনের দিকে ব্যথা। অনেক সময় সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ব্যথা অনুভূত হয়। দু-চার ঘণ্টা পর কমে যায়, মাথা ঘোরা,বুক ধড়ফড় করা,মনোযোগের অভাব। অল্পতে হাঁপিয়ে যাওয়া। মাংসপেশির দুর্বলতা,পা ফোলা, বুকে ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, ক্লান্তিবোধ, ঘাড় ব্যথা।
বুক ব্যথা অনুভব |
কি কি কারণে হয়?? ধূমপান, জর্দা দিয়ে পান সুপারি খাওয়া, ওজন বেশি, অলস জীবন-যাপন।খাবারের সঙ্গে বেশি লবণ গ্রহণ। নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন। বংশগত কারণে। ক্রনিক কিডনি রোগ।অ্যাড্রেনাল ও থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা।
🔹যা যা করবেন, ওজন কামানো, লবণ ও সোডিয়ামযুক্ত খাদ্য কম গ্রহণ। হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ও শারীরিক পরিশ্রম করা। রেড মিট বর্জন করা।
রিফ্লেক্সোলজি বিন্দুসমূহ।
ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। মানবদেহে রক্ত চাপের একটি স্বাভাবিক মাত্রা আছে। তার ওপর ভিত্তি করেই উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার ও কম রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করা হয়।
রক্তচাপ একটি সুনির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে থাকে এবং তা দুই ধরনের হয়। ওপরের মাপকে সিস্টলিক রক্তচাপ ও নিম্নের মাপকে ডায়োস্টোলিক রক্তচাপ বলা হয়।
সাধারণত মানবদেহে সিস্টলিক রক্তচাপ ১০০ থেকে ১৪০ পর্যন্ত এবং ডায়োস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ থেকে ৯০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদি কারও এর চেয়ে বেশি মাত্রার রক্তচাপ থাকে তবে এই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বলা হয় এবং যদি কারও এর চেয়ে কম রক্তচাপ থাকে, তবে এই অবস্থাকে কম রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার বলা হয়ে থাকে।
পানিশূন্যতা দেখা দিলে যেমন অতিরিক্ত ঘাম, ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ_ দেহের ভেতরে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে যেমন_ রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত বা দুর্ঘটনার ফলে রক্তপাত ঘটলে এবং অপুষ্টিজনিত কারণে লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের প্রথম ৬ মাস হরমোনের প্রভাবে লো প্রেসার হতে পারে।
মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া, মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা, চোখে অন্ধকার দেখা বা সরষে ফুলের মতো দেখা বা চোখে ঝাপসা দেখা, শারীরিক দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদগ্রস্ততা, কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদকম্পন, নাড়ি বা পালসের গড়ি বেড়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি লো ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হয়েছেন। লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ ও উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
প্রেশার হাই হয়ে গেলে যা খাবেনঃ
কচি ডাবের পানি, পাকা কলা, বেদেনার রস রুম টেম্পারেচার করে খেতে হবে। এভোক্যাডো, সেদ্ধ মিষ্টি আলু, সবুজ আপেল,
রক্তচাপের ঔষধ গ্রুপ জেনে নিনঃ
Losartan Potassium 25,50,100, mg
রোগঃ হাই প্রেসার কমানোর জন্য, সিস্টোলিক ১৪০ এর বেশি হলে। [ Angilock / Losart / Losan ]
1+0+0......... Continues
Amlodipine 5 mg [ Amdocal / Locard / Cab ]
রোগঃ হাই প্রেসার কমানোর জন্য।
Tenoloc 50mg বা Amdocal 5mg হঠাৎ প্রেশার বেড়ে গেলে খাবেন। 1+0+0...........
নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশারের কারণ,লক্ষণ।
সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ মিলিমিটার পারদ ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিলিমিটার পারদের নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ ধরা হয়।এতক্ষণ তো জানলাম কেন হয় ও এর উপসর্গ সমূহ এখন জানবো লো প্রেশার হলে কি করণীয় বা এর প্রতিকার সম্মন্ধে: খাবার স্যালাইন প্রেশার কম হলে প্রথমেই স্যালাইন খেতে হবে। শরীরে পানিশূণ্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রেশার যখন কমে যায় তখন শুধু খাবার স্যালাইন খেলেই প্রেশার বেড়ে যায়।
নিম্ন রক্তচাপ হলে এসময় গ্লুকোজ খেলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। লবণ এবং লবণ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। সোডিয়াম রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে। তাই লবণযুক্ত খাবার খেয়ে রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারেন। দুধ ও ডিমসহ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। মুরগীর চেয়ে হাঁসের ডিম এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী। কফি প্রেশার বাড়াতে বেশ কার্যকরী।
মধু ও বাদাম বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে। মধু দুধে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় এবং কাঠবাদাম ও চিনাবাদাম খেতে পারেন। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, পুদিনা পাতা দ্রুত প্রেশার বাড়ায়। তাই প্রেশার কমে গেলে এই পাতা বেঁটে নিয়ে এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
প্রেশার স্বাভাবিক রাখতে ব্যায়াম বেশ কার্যকর। ব্যায়াম হার্টে রক্ত চলাচল নিয়মিত করে। লো প্রেশার দেখা দিলে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
তাজা শাক-সবজি, নিম্ন রক্তচাপ রোধে শাক-সবজি অনেক উপকারী। কারণ ভিটামিন ও মিনারেল ঘাটতির জন্য হতে পারে। ফলিক এসিড ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি করে। মাংস(গরুর)। টমেটো ক্যাচাপ খেতে পারেন।
শরীর দুর্বল পেশার লো হলে করণীয়ঃ
Tab. Zif......১+0+১ খাবার পর ১মাস
Syp. Zoviya gold.২+0+২ দুই চামুচ করে ১ মাস
Tab. Omidon 10.. ১+০+১..খালি পেটে ১মাস
Cap. Cozec 20....১+0+১খালি পেটে ১ মাস
পানি বেশি পান করবেন। ফল মুল বেশি করে খাবেন। পুষ্টিকর খাবার বেশি খাবেন। ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন।
বিঃদ্রঃ নিজে নিজে ডাক্তারের পরামর্শ বাদে মেডিসিন খাবেন না।
লেখিকাঃ ডাঃ রোকসানা ইয়াসমিন রোকেয়া
Post a Comment