সকল প্রশংসা আল্লাহ্, যার অনুগ্রহে বান্দারা নেক আমল করতে সমর্থ হয়। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক যোদ্ধা ও বীরদের নেতা মুহাম্মাদের উপর,তাঁর সাহাবাগণের উপর, এবং কিয়ামাত পর্যন্ত আগত তাঁর সকল অনুসরণকারীর
উপর।
দুর্ভাগ্যবশত আজ কিছু মুসলিম এই ভেবে হতাশ ও নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে আছে যে,মুসলিমদের পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনার কোনো পথ এখন আর নেই। আবার কিছু মুসলিম আমাদেরকে সন্ন্যাসবাদের দিকে আহবান করে, কারণ তারা ভাবে ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য বকরি নিয়ে পাহাড়ে ও বৃষ্টিময় স্থানে চলে যাওয়ার সময় চলে এসেছে।
সহীহ বুখারি শরীফে রয়েছে, “এমন এক সময় আসবে, যখন মুসলিমের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পত্তি হবে বকরি যা নিয়ে সে পাহাড় ও বৃষ্টিস্নাত স্থানে (উপত্যকায়)চলে যাবে, যাতে সে তার দ্বীন নিয়ে ফিতনা থেকে পালাতে পারে।”
কিন্তু নবীজী তাদের কথা বলছেন, যাদেরকে মুরতাদ হতে বাধ্য করা হবে। মুসলিমদের যতদিন ইসলামী বিধান পালনের ও পরস্পর সাহায্য-সহযোগিতা করার সুযোগ
রয়েছে, ততদিন বৈরাগী জীবনযাপন হারাম।
আবার কিছু ‘আলিম বলে থাকেন..
ইমাম মাহদি ও ঈসা (আলাইহিমাসসালাম) আসা ছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই। এ ধরনের হতাশ মনোভাব রাখা মুসলিমরা অন্য মুসলিমদের আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
নবীজী বলেছেন,“যে বলবে যে মুসলিমরা ধ্বংস হয়ে গেছে, সে তাদের আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে।”
কে ভেবেছিলো যে, ক্রুসেডারদের হাতে একশ বছর পরাধীনতার পর জেরুজালেমসহ অন্যান্য মুসলিম ভূখণ্ড আবারও মুক্ত হবে?
কে ভাবতে পেরেছিলো যে, বীর সালাহউদ্দীন এসকল ভূখণ্ড মুক্ত করবেন এবং হাত্তিনের যুদ্ধে জয়লাভ করে মুসলিমদের ক্ষমতা-প্রতিপত্তি ফিরিয়ে আনবেন?
কে ভাবতে পেরেছিলো যে, তাতারদের হাতে সারা মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন এবং মুসলিমদের উপর ব্যাপক হত্যা ও ধর্ষণের পর আবারও ইসলাম গৌরব ও ক্ষমতা সহকারে মাথা তুলে দাঁড়াবে? অথচ বলা হয়ে থাকে তাতারি নেতা হালাকু খাঁ মুসলিমদের খুলি দিয়ে পাহাড় গড়েছিলো।
কে বিশ্বাস করতে পেরেছিলো যে, বীর সাইফুদ্দীন কুতুয্ 'আইন জালুতের যুদ্ধে জয়লাভ করে মুসলিম বিশ্বকে মুক্ত করে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনবেন?
ইতিবাচক মনোভাব একটি জাতির উপর বিরাট প্রভাব ফেলে। জাতির মানুষেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে।
যুবসমাজের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে.. সালাহউদ্দীনের (রাহিমাহুল্লাহ) জীবনী ও তাঁর বিজয়ের কারণগুলো অধ্যয়ন করার জন্য। আমি নিশ্চিত যে, মুসলিম শাসক ও যুবসমাজ যদি সালাহউদ্দীনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে, তাহলে তারা আবারও জেরুজালেম মুক্ত করবে, ফিলিস্তিন পুনরুদ্ধার করবে এবং ইসলামের পতাকা আবারও উঁচিয়ে ধরবে।
আল্লাহ্ বলেন..
“দেশে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিলো, আমি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার এবং তাদেরকে নেতা ও উত্তরাধিকারী করার ইচ্ছে করলাম।”
সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহিমাহুল্লাহ বইটির সূচিপত্র।
হে যুবসমাজ! ভবিষ্যতে একদিন না একদিন মুসলিমরা অবশ্যই বিজয়ী হয়ে ইসলামের গৌরব পুনরুদ্ধার করবে। এটি নবীজীর হাদীস থেকে প্রমাণিত,“তোমাদের মধ্যে নবুয়ত থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করেন,তারপর আল্লাহ তার সমাপ্তি ঘটাবেন। তারপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
নবুয়তের আদলে খিলাফত। তা তোমাদের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করেন, অতঃপর তিনি তারও সমাপ্তি ঘটাবেন। তারপর আসবে যন্ত্রণদায়ক বংশের শাসন, তা থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করবেন। এক সময় আল্লাহর ইচ্ছায় এরও অবসান ঘটবে। তারপর প্রতিষ্ঠিত হবে জুলুমের শাসন এবং তা তোমাদের উপর থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করবেন। তারপর তিনি তা অপসারণ করবেন। তারপর
আবার ফিরে আসবে নবুয়তের আদলে খিলাফত। তখন ইসলামের শিক্ষা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে জমিন ও আসমান বাসীরা খুশি হবে।
তখন আসমান থেকে অবারিত বৃষ্টি ঝরবে এবং জমিন থেকে সব রকম উদ্ভিদ জন্মাবে।” প্রতীয়মান হয় যে, বংশীয় শাসন উসমানী খিলাফাতের মাধ্যমে শেষ হয়ে গেছে।
এখন আমরা যুলুমের শাসনের অধীনে আছি, যা তুরস্কে কামাল পাশার হাতে শুরু হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু ইসলামী পুনর্জাগরণের আভাস থেকে বোঝা যায় যে এই শাসন কখনই স্থায়ী হবে না। নবুয়তের আদলে খিলাফাত আবার ফিরে আসবে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই তা বাস্তবায়িত হবে বলে আমি আশা রাখি।
আমি আশাবাদী যে যুবসমাজের হাত, পুরুষদের শক্তি, দা'ঈদের অবিচলতা ও ধনীদের দানশীলতার মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হবেই। এবং আল্লাহর জন্য তা মোটেও কঠিন নয়। (আরও দেখুন আমার বই হাতা ইয়া'লামুশ শাবাব, পৃষ্ঠা
৮৭-৮৮)
পরিশেষে এই বইয়ের সকল শুভানুধ্যায়ীদের আমি ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ
জানাই কবি আব্দুল জাব্বার আর-রাহবিকে তাঁর প্রশংসা, চমৎকার কবিতা ও গভীর আস্থার জন্য। আমি তাঁর প্রশংসা ও কবিতা শেষ পৃষ্ঠায় পাঠকদের জন্য উল্লেখ করে দিয়েছি। আল্লাহ্ আমাদের নেক আমলগুলো ইখলাসপূর্ণ করে দিন
এবং আমাদেরকে সর্বদা আমাদের সাহসী বীর পূর্বসূরিদের নিয়ে লেখার সামর্থ্য দান করুন, যাতে নতুন প্রজন্ম তা থেকে উৎসাহ লাভ করে। একমাত্র আল্লাহই দু'আ কবুলকারী।
বইটি পড়ুনঃআমাদের আকাবিরদের সম্পর্কে জানুন।কেমন তাঁরা ইসলামের জন্য নিজেদের কুরবানী করেছেন?
বইটির নাম: সালাহউদ্দীন আইয়ুবী (রহ:)।
লেখকের নাম: আব্দুল্লাহ নাসিহ উলওয়ান (রহ:)।
PDF সাইজ:19 MB।
বইটির পৃষ্ঠা: ১৬৩।
Post a Comment