আরবি চন্দ্র বর্ষের সপ্তম মাস হলো রজব মাস।রজব মাসের পূর্ণ নাম হলো ❝আর রজব আল মুরাজজাব” বা “রজবুল মুরাজ্জাব❞।
বিদায় নিয়েছে 2023 সাল। নতুন বছরে মুসলমানদের শবে বরাত, রমজান, শবে কদর ও ঈদের মতো ধর্মীয় বিধান পালন করতে হবে, আগের মতোই ধারাবাহিক নিয়মে। ধর্মীয় বিষয়ে আমাদের আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।আমাদেরকে ধর্মীয় বিষয় পালন করতে কোন গাফলতি করা যাবে না।
ইবাদতের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে বছরের বিশেষ বিশেষ কিছু দিনে ইবাদতের আলাদা ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। যেমন, শবে কদর, শবে বরাত, আশুরার দিনে নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে।
2024 সালের শবে বরাত কত তারিখে হবে..
জেনে রাখার সুবিধার জন্য এখানে তারিখ তুলে ধরা হলো- >>শব-ই-বরাত-২৫ ফেব্রুয়ারি, (রবিবার)।
রমজান, ঈদ, হজ, শবে বরাত, শবে কদর, শবে মেরাজ, আশুরার দিনগুলো মূলত চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। ইসলামি ক্যালেন্ডারের প্রত্যেক মাস শুরুর তারিখ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়।
এখানে ক্যালেন্ডারে উল্লেখিত তারিখের ভিত্তিতে শবে বরাতের দিন তুলে ধরা হয়েছে। আরবি মাসে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হয়।
রজব মাসের আমল ও ফজিলত..
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব ও শাবান এ দুই মাস রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ দোয়া বেশি পরিমাণে পড়তেন,
اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থঃ হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন। এবং রমজান মাস আমাদের নসিব করুন।
হযরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) রমজান মাস ছাড়া সবচেয়ে বেশি রোজা আদায় করতেন শাবান মাসে, অতঃপর রজব মাসে।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন: যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবী কারীম (সা.)–এর আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।কোনো কোনো রেওয়াতে পাওয়া যায়. রাসুল (সা.) রজব মাসে ১০টি রোজা আদায় করতেন, শাবান মাসে ২০টি রোজা রোজা আদায় করতেন, রমজান মাসে ৩০টি রোজা আদায় করতেন।
হযরত সালমান ফারসী(রা.) হতে বর্ণিত: রজব মাসের প্রথম তারিখে ১০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়।
রজবের প্রথম রাতের দোয়া কবুল হয় :
হাদিস শরীফে রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার কথা এসেছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন রয়েছে, যেই রাতগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহ তায়ালা ফিরিয়ে দেন না, (অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন)।রাতগুলো হলো—(১)জুমার রাত।(২)রজবের প্রথম রাত। (৩)শাবানের ১৫ তারিখের রাত।(৪)ঈদুল ফিতর (৫)ঈদুল আজহার রাত।
এ মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো—
এ রজব মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের (اشهرالحرام) একটি। রাসুল (সা.) এ রজব মাস সম্পর্কে খুবই গুরুত্ব দিতেন। ফলে রজবের চাঁদ দেখা গেলেই তিনি কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত; যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম (সা.) তখন এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন, দোয়াটি হলে..
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়াবাল্লিগনা রমাদান। অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন, এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।
রজব মাসে আমাদের কি করণীয়...
রজব ও শাবান মাসের নেক আমল ও পাপ কাজ বর্জনের মাধ্যমে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তওবা ও ইস্তিগফার বেশি বেশি করতে হবে। মোহ মুক্তি ও পাপ কাজ পরিহার করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সমাজের একে অন্যকে সৎকাজের আদেশ করতে হবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে।
রমজান মাসে যেন ইবাদতের পরিবেশ রক্ষা হয়, সে বিষয়ে আমাদের বিশষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজের চাপ কমাতে হবে, এবং শ্রমিকদের যথাযথ মূল্য দিতে হবে। দান-খয়রাতের বেশি বেশি করতে হবে। রমজানে গরিব মানুষ যেন ভালোভাবে সাহ্রি ও ইফতার করতে পারে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।অসহয় মানুষের পাশে দাড়াতে হবে।আত্মীয় স্বজনের খোঁজ খবর নিতে হবে। এসব বিষয়ে পরিকল্পনা করা রজব শাবান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল। অতএব এ সব কাজ থেকে বিরত থাকা যাবে না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করেন।আমিন
Post a Comment