ইসলামী ইতিহাসের হাজারও কাহিনী থেকে আমরা আপনাদের জন্য নির্বাচন করেছি এমন এক বিশেষ কাহিনী, বর্তমান যুগে যা অধ্যয়ন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরি। তা হল ফিলিস্তিনের কাহিনী। ফিলিস্তিনের কাহিনী মানবেতিহাসের এমন এক অধ্যায়, যা অধ্যয়ন ও আত্মস্থ করা মুসলমানদের আবশ্যক। এতে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টান্ত আর উপদেশ। রয়েছে এমন অজস্র শিক্ষা, যা থেকে আমরা উপকৃত হতে পারি এখন, এবং নিকট ও দূরবর্তী ভবিষ্যতে।
কেউ কেউ মনে করেন, ফিলিস্তিন ইস্যু একটি ভূখণ্ডগত বিষয়; যা এতান্তই ফিলিস্তিনীদের নিজস্ব ব্যাপার। যেহেতু ফিলিস্তিনীরা প্রতিনিয়ত নানাবিধ ঘটনার সম্মুখীন হন, তাই এই অধ্যায় নিয়ে পড়াশোনা তাদেরই প্রধান কর্তব্য।
এটা মুসলমানদের প্রথম কেবলা এবং তৃতীয় হারাম। এখানে রয়েছে মসজিদে আকসা। এটা এমনই গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ যে, হাদীসের ভাষ্যমতে মক্কার মসজিদে হারাম, মদীনার মসজিদে নববী এবং ফিলিস্তিনের এই মসজিদ বাদে আর কোনো মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে না।
ফিলিস্তিনের ভূমি কুরআনের একাধিক বিবরণমতে বরকতময় অঞ্চল। ফিলিস্তিনের কাহিনী নির্বাচনের অন্যতম আরেক কারণ, ফিলিস্তিনের কাহিনীর আলোকে আমরা অধ্যয়ন করব পুরো ইসলামী ইতিহাস। মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের প্রতিটি ধাপ এই ভূখণ্ড দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। রসুল ও খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ থেকে ইসলামের আলোকে শাসনকারী প্রতিটি সাম্রাজ্য এই ভূখণ্ড হয়ে অতিবাহিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে আমরা বিচরণ করব মানবেতিহাসের প্রতিটি পরতে পরতে। শুধু ইসলামী ইতিহাসই নয়,
বরং ফিলিস্তিনের ইতিহাস থেকে আমরা জেনে নেব পারসিক, রোমান, অ্যাসিরিয়ান, ব্যাবিলন ও ফারাওদের ইতিহাস। এমনইভাবে ফিলিস্তিনের ইতিহাস ধরে আমরা বিচরণ করব আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসেও। ঘাঁটাঘাঁটি করব ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানিসহ বহু আধুনিক রাষ্ট্রের ইতিহাস। এই বরকতময় রাষ্ট্রের ইতিহাসে দুনিয়ার যে রাষ্ট্রেরই রয়েছে কোনো না কোনো সম্পর্ক কিংবা কোনো প্রকারের রেষারেষি, সেগুলোর ইতিহাসও আমরা জেনে নেব। সেই সাথে আমরা আলোচনা করব চলমান ফিলিস্তিন সংকট নিয়েও।
কেননা, ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে এত অধিক পরিমাণে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, যা অন্য যেকোনো ইস্যু নিয়ে চালানো অপপ্রচারের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। জায়নবাদীদের দখলে রয়েছে ভয়ঙ্কর মিডিয়া শক্তি। এই মিডিয়া শক্তির ব্যবহার করে ফিলিস্তিনের ইতিহাসে ঘটানো হয়েছে এক বড় ধরণের বিকৃতি। সেই বিকৃতির ধুম্রজালে আচ্ছন্ন হয়েছে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবাই। এসব বিষয় সামনে রেখেই আজ আমরা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি এই গ্রন্থ। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের পশ্চাতে আমাদের রয়েছে এক মহৎ উদ্দেশ্য। আল্লাহ কবুল করুন। - রাগিব সারজানি
মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের অতিগুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আলোচনার প্রত্যাশায় কালের বিবর্তন নিয়ে এ গ্রন্থটির রচনা। মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস অতিদীর্ঘ এবং অত্যন্ত মহিমান্বিত। মূল্যবান রত্ন, অফুরন্ত ধন-সম্পদ ও অঢেল খনিজে পরিপূর্ণ এ ইতিহাস, যার বিস্ময় কখনও শেষ হওয়ার নয়।
ইসলামী ইতিহাসের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর মধ্য থেকে আমি আপনাদের জন্য এমন একটি কাহিনী নির্বাচন করেছি, বর্তমান যুগে যা অধ্যয়ন করা মুসলমানদের জন্য আবশ্যক। তা হল ফিলিস্তিনের কাহিনী। আমি মনে করি, ফিলিস্তিনের কাহিনী ইতিহাসের এমন একটি অধ্যায়, যা অধ্যয়ন না করে মুসলমানদের কোনো গত্যন্তর নেই। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে অসংখ্য উপদেশ ও দিকনির্দেশনা। রয়েছে এমন সব শিক্ষা যা থেকে আমরা পাথেয় পেতে পারি। উপকৃত হতে পারি এখন এবং নিকট ও দূরবর্তী ভবিষ্যতে।
আগেই বলে রাখি, কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, আমরা ইতিহাস পড়ব কেন? উত্তরে আমি বলব, ইতিহাস পাঠের সরাসরি নির্দেশ এসেছে আমাদের রব -এর পক্ষ থেকে। তিনি বলেন।
আমি ইচ্ছে করলে এর দ্বারা তাকে উচ্চ মর্যাদা দিতে পারতাম! কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়ে এবং নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। তার অবস্থা কুকুরের মত; তার উপর তুমি বোঝা চাপালেও সে হাঁপায়, বোঝা না চাপালেও সে হাঁপায়। যে সম্প্রদায় আমার নিদর্শন অস্বীকার করে, তার অবস্থাও এরকম, তুমি কাহিনী বর্ণনা করো; যাতে তারা চিন্তা করে। [সুরা আরাফ : ১৭৬]
এই আয়াতে রয়েছে আল্লাহ -র পক্ষ হতে সরাসরি নির্দেশ, যেন আমরা ইতিহাস অধ্যয়ন করি, কাহিনী বর্ণনা করি।
বই সম্পর্কে তথ্যঃ
লেখকঃ ডঃ রাগিব সারজানী
অনুবাদঃ আব্দুর রহমান আজহারী
বই সাইজঃ 18.3 এমবি
Post a Comment