২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা: এবারের ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব ইজতেমার তারিখ 2025
এই ইজতেমাকে উদ্দেশ্য করে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ সমবেত হন। ২০২৫ সালের ইজতেমায় প্রায় ৪০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইজতেমার দুই পর্বে এই বিপুল জনসমাগমকে সামাল দিতে আয়োজকরা বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, বিশেষ করে আখেরি মুনাজাতের সময় বিপুল জনসমুদ্র জমায়েত হয়
২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই বিশ্ব ইজতেমায় প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে একত্রিত করে, যেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসলমানরা ইসলামী শিক্ষা ও প্রার্থনার জন্য সমবেত হন। এই ইজতেমার আয়োজন মূলত তাবলিগ জামাত করে থাকে, যা ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর এই স্থানে ইজতেমা পরিচালনা করে আসছে।
ইজতেমার মাঠের আয়তন কত?
সরকারি নকশা অনুযায়ী, গাজীপুরের সদর উপজেলার মাছিমপুর মৌজার ৯০ দশমিক ৮৮ একর ও টঙ্গি মৌজার ৬৯ দশমিক ১২ একর জমি নিয়ে ইজতেমা ময়দান। ময়দানের দক্ষিণ-পশ্চিমে তুরাগ নদ, উত্তরে টঙ্গি-আশুলিয়া বাইপাস সড়ক, পূর্বে কিছু অংশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং বাকি অংশে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানা।
নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রস্তুতি
বিশাল সমাবেশের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি থাকবে যাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নিরাপদে তাদের আচার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেন। এছাড়াও, প্রতিবারের মতোই বিভিন্ন স্বাস্থ্য শিবির স্থাপন করা হবে, যেখানে উপস্থিতদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।
ধর্মীয় গুরুত্বঃ
বিশ্ব ইজতেমা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হজের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সমাবেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। ইজতেমার শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় "আখেরি মুনাজাত," যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ একত্রিত হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
ইজতেমার ইতিহাসঃ
বিশ্ব ইজতেমা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৪৬ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে। পরবর্তীতে এটি টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে স্থানান্তরিত হয়। সময়ের সাথে সাথে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে, ২০১১ সাল থেকে ইজতেমা দুটি পর্বে ভাগ করে আয়োজন করা হচ্ছে।
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ, যা প্রতিবছর তুরাগ নদীর তীরে, ঢাকার উপকণ্ঠে টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত তাবলিগ জামাত এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়, যার লক্ষ্য ইসলামের শিক্ষা প্রচার এবং মুসলিমদের আত্মিক উন্নতির জন্য কাজ করা। ইজতেমায় লক্ষাধিক মুসলিম দেশ-বিদেশ থেকে সমবেত হন, যা এই সমাবেশকে হজের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েতে পরিণত করেছে।
ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয় যাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ সহজেই অংশ নিতে পারে। প্রথম পর্বে সাধারণত মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা অংশ নেন, এবং দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদের অনুসারীরা যোগ দেন। অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত ধর্মীয় বয়ান শোনেন, নামাজ আদায় করেন এবং শেষ দিনে আখেরি মুনাজাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
টঙ্গী ইজতেমার অনন্য দিক হলো এর আয়োজনে অংশগ্রহণকারী মুসলিমদের বৈচিত্র্য। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসলিমরা ইসলামের মূল শিক্ষা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে এখানে একত্রিত হন, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Post a Comment