সুলতান কাহিনি পিডিএফ বই রিভিউ, উসমানী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

উসমানী সাম্রাজ্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয়:

উসমানী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১২৯৯ সালে, এবং এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯২৩ সালে তুরস্কের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শেষ হয়। এই সাম্রাজ্য তার শাসনকালের অধিকাংশ সময়েই ইউরোপ এবং এশিয়ার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে অন্যতম প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। সাম্রাজ্যের শাসকগণ, বিশেষত সুলতানরা, তাদের শক্তিশালী সামরিক নেতৃত্ব এবং কৌশলী কূটনীতির মাধ্যমে এক বিশাল অঞ্চল শাসন করতেন। সাম্রাজ্যের অধীনে বিজ্ঞান, শিল্প, এবং সংস্কৃতির অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটে, বিশেষ করে ইসলামী স্থাপত্য, জ্ঞানচর্চা ও আইনব্যবস্থা উসমানী শাসনের প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হয়।


"সুলতান কাহিনি" বইটি উসমানী সাম্রাজ্যের ৬০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে চলমান বিস্তৃত শাসনকালের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে রচিত। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক বা সামরিক ইতিহাস নয়, বরং সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সাম্রাজ্যের নানা দিকগুলোকে বিশদভাবে তুলে ধরেছে। উসমানী সাম্রাজ্য ছিল পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী ও প্রভাবশালী সাম্রাজ্য, যা তিনটি মহাদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং তাদের প্রভাব পুরো ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার ওপর পড়েছিল। বইটির লেখক তামিম রায়হান উসমানী সাম্রাজ্যের দীর্ঘ ইতিহাসকে বাংলাভাষায় নতুন প্রজন্মের পাঠকদের জন্য সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন।

বইটির মূল দিকনির্দেশনা:
বইটি মূলত উসমানী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাকালীন শাসক থেকে শুরু করে সাম্রাজ্যের পতন পর্যন্ত ইতিহাসকে কেন্দ্র করে লেখা। তবে, এর আরেকটি বিশেষত্ব হলো বইটি উসমানী সুলতানদের জীবনের ব্যক্তিগত দিকগুলোতেও গভীরভাবে নজর দিয়েছে। যেমন, সুলতানদের পারিবারিক জীবন, তাদের শাসনকালীন চ্যালেঞ্জ, বিভিন্ন যুদ্ধের নীতিমালা এবং তাদের শাসনকালে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামরিক সিদ্ধান্তগুলোর বিশদ বিবরণ রয়েছে। বইটিতে বিভিন্ন সুলতানের শাসনামল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে—যেমন সুলতান মুহাম্মদ আল-ফাতেহ, যিনি কনস্টান্টিনোপল জয় করেন, এবং সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট, যিনি উসমানী সাম্রাজ্যের শীর্ষ উচ্চতায় পৌঁছান।

বইয়ের বিশ্লেষণ:
বইটির প্রথম অংশে উসমানী সাম্রাজ্যের উত্থান ও শাসনকালের প্রথম দিকের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। কীভাবে ছোট একটি তুর্কী উপজাতি বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হলো, কীভাবে বালকান এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে তারা আধিপত্য বিস্তার করলো, এবং কীভাবে ইসলামের ধ্বজা উর্ধ্বে তুলে সামরিক বিজয় অর্জন করেছিল—এসব বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে। এই আলোচনায় লেখক বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন কনস্টান্টিনোপলের পতন, যা ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। 

বইটির দ্বিতীয় অংশে উসমানী সাম্রাজ্যের সোনালী যুগ এবং ক্রমশ অবক্ষয়ের পথে যাত্রা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সুলতানদের ক্ষমতা, তাদের নীতিমালা, এবং সাম্রাজ্যের পতনকালীন শাসকদের অদক্ষতা কিভাবে সাম্রাজ্যের ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ অংশে লেখক চতুর্দশ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে ঘটতে থাকা সাম্রাজ্যের ভিতরের এবং বাইরের রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটকে তুলে ধরেছেন।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক:
লেখক বইটিতে শুধু যুদ্ধ এবং শাসনের বিবরণ দেননি, বরং সাম্রাজ্যের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের নানা রঙিন দিকগুলোও সামনে তুলে ধরেছেন। উসমানী সাম্রাজ্যের অধীনে বসবাসরত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের আইনব্যবস্থা, শিক্ষা এবং ধর্মীয় প্রভাব সবকিছুর ওপরই আলোকপাত করা হয়েছে। বিশেষত, উসমানী স্থাপত্যের ক্ষেত্রে যেমন "ব্লু মসজিদ" বা "টপকাপি প্রাসাদ" এর মত বিখ্যাত স্থাপনাগুলো কীভাবে সাম্রাজ্যের শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছিল, তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

বইটির পাঠকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ:
"সুলতান কাহিনি" মূলত এমন একটি বই, যা শুধুমাত্র ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং যে কেউই পড়তে পারবেন। এতে উসমানী সাম্রাজ্যের ইতিহাস সহজবোধ্য ও প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সাধারণ পাঠকদের জন্য বোধগম্য করে তোলা হয়েছে। বইটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যে এটি উসমানী সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ চিত্র সামনে এনে দেয়। তাই যারা উসমানী সাম্রাজ্য সম্পর্কে জানতে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ বই। 

"সুলতান কাহিনি" শুধু একটি ইতিহাসের বই নয়, এটি পাঠকদের জন্য এক ইতিহাসের ভ্রমণ। লেখক তার ভাষার প্রাঞ্জলতা এবং ঐতিহাসিক তথ্যের নির্ভুল উপস্থাপনার মাধ্যমে পাঠকদের একটি চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা প্রদান করেছেন। উসমানী সাম্রাজ্যের ভাঙাগড়ার কাহিনি জানার জন্য এবং সেই সময়কার সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানার জন্য বইটি একটি অপরিহার্য রচনা। 
এটি পাঠকদের উসমানী সাম্রাজ্যের বিস্তীর্ণ ইতিহাসকে নতুনভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে। "সুলতান কাহিনি" ইতিহাসপ্রেমী যে কোনো ব্যক্তির জন্য এক অনবদ্য সংকলন।

সুলতান কাহিনি বই তথ্যঃ
লেখকঃ তামীম রায়হান
বই সাইজঃ ২০ এমবি

ডাউনলোড করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
১. Google Drive থেকে ডাউনলোড:
  • প্রথমে আপনাকে বইটির Google Drive লিঙ্ক সংগ্রহ করতে হবে।
  • লিঙ্কটি ব্রাউজারে ওপেন করলে ড্রাইভ পেজে বইটি দেখা যাবে।
  • ড্রাইভ পেজে ডানদিকে উপরে থাকা ডাউনলোড আইকন (ডাউনলোড তীর চিহ্ন) এ ক্লিক করুন।
  • এরপর ফাইলটি আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড হয়ে যাবে।

২. কওমী কলম টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে ডাউনলোড:
  • প্রথমে আপনার ডিভাইসে **টেলিগ্রাম অ্যাপ** ইনস্টল করে নিন (যদি আগে থেকে না থাকে)।
  • তারপর কওমী কলম চ্যানেলে যোগ দিন। “চ্যানেলের লিঙ্ক”
  • চ্যানেলের সার্চ অপশন ব্যবহার করে "সুলতান কাহিনি" বইটির পোস্ট খুঁজে নিন।
  • পোস্টে বইটির ফাইল লিঙ্ক দেওয়া থাকবে। সেখানে ডাউনলোড বাটন এ ক্লিক করলে বইটি আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড হয়ে যাবে।
বইটি যদি সরাসরি ডাউনলোডযোগ্য না হয়, তবে চ্যানেলের পোস্টে উল্লেখিত ইনস্ট্রাকশন ফলো করতে হতে পারে।
এছাড়া সকল ধরনের পিডিএফ বই পেতে আমাদের চ্যানেলের জয়েন থাকুন। আপনার কোন বইয়ের প্রয়োজন হলে সেটা মেসেজে বলুন। 

Post a Comment

أحدث أقدم
icon যে কোন প্রয়োজনে টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেসেজ দিন